সাগরদ্বীপের এক প্রান্তে অবস্থিত সাগর সৈকত যা সারা বিশ্বের তীর্থযাত্রীদের কাছে গঙ্গাসাগর নামে পরিচিত। প্রতিবছর গঙ্গাসাগর মেলার সময় পবিত্র সাগরসঙ্গমে স্নান করতে লক্ষ লক্ষ ভক্তের আগমন হয়। মূলত তীর্থযাত্রার জন্য বিখ্যাত হলেও পর্যটকদের জন্য এই শান্ত ও মনোরম সমুদ্রসৈকত সূর্যাস্ত উপভোগ করবার চমৎকার স্থান।
সাগরদ্বীপে সমুদ্রসৈকতের কাছেই একটি লাইটহাউস আছে। বাতিঘরটি আপনাকে আশেপাশের এলাকার একটি সুন্দর দৃশ্য দেয় এবং এটি পর্যটকদের প্রবেশের জন্য উন্মুক্ত। এছাড়াও, সেই সমস্ত ফটোগ্রাফি ভক্তদের জন্য, এই বাতিঘরটি এই মাটির শহরের ছবি তোলার উপযুক্ত জায়গা।
দক্ষিণবঙ্গের নামখানা ব্লকের অত্যন্ত জনপ্রিয় ও মনোরম একটি অর্ধচন্দ্রাকৃতি সমুদ্রসৈকত হল বকখালি। সমুদ্র সৈকতটি একটি প্রসারিত 8 কিলোমিটার এলাকা জুড়ে, যা সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্যগুলির একটি প্রদান করে। শহরের জীবনের কোলাহল থেকে দূরে, বকখালী সমুদ্র সৈকত প্রতিফলনের জন্য একটি শান্ত পরিবেশ প্রদান করে। বিশলক্ষ্মী মন্দির একটি তাৎপর্যপূর্ণ স্থান, সৈকতের চরম প্রান্তে অবস্থিত।
আমাদের পর্যটন ওয়েবসাইট দেখুনগঙ্গাসাগর গাঙ্গেয় সমভূমির দক্ষিণতম প্রান্তে অবস্থিত একটি দ্বীপ, যেখানে গঙ্গা নদী বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি এই দ্বীপের ধর্মীয় গুরুত্ব আছে। অপূর্ব সুন্দর কিছু সমুদ্রসৈকত সমৃদ্ধ এই দ্বীপ গঙ্গাসাগর মেলার কারণে সারা বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ তীর্থস্থান। মেলার দিনগুলিতে দ্বীপটি বিশ্বাস ও সংস্কৃতির মেলবন্ধনে এক আশ্চর্য রূপ নেয়। ধর্মীয় স্থান হওয়ার পাশাপাশি গঙ্গাসাগর শান্তি ও বিশ্রাম গ্রহণের জন্য শ্রেষ্ঠ। প্রতি বছর জানুয়ারিতে, মকর সংক্রান্তির সময় সারা দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী এই পবিত্র সাগরসঙ্গমে স্নান করতে আসেন।
সজনেখালিকে সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার বলা যায়। ৬১১০ হেক্টর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই অঞ্চল গোসাবা ব্লকের অধীনে পড়ে এবং বনবিভাগের প্রধান কার্যালয় এখানেই অবস্থিত। সুন্দরবনের রিসর্টগুলির কাছাকাছি হওয়ার কারণে এখানকার ওয়াচ টাওয়ারগুলি বেশ জনপ্রিয়। বিশেষত সজনেখালি ওয়াচ টাওয়ার থেকে সুন্দরবনের একটি চমৎকার ‘প্যানোরামা ভিউ’ পাওয়া যায় যা দর্শকেরা অত্যন্ত পছন্দ করেন। সজনেখালি ওয়াচ টাওয়ার কমপ্লেক্সে একটি প্রকৃতি আখ্যান কেন্দ্র, একটি বনবিবি মন্দির ও একটি কুমীর পার্ক নির্মিত হয়েছে। ২০০৪ সালের সরকারি আদমসুমারি অনুযায়ী, এই এলাকায় ২৭ টি বাঘের অস্তিত্বর চিহ্ন পাওয়া গেছে। বাঘ ছাড়াও সজনেখালি জঙ্গলে বন্য বরাহ, চিতল, প্যাঙ্গোলিন, ফিশিং ক্যাট, ম্যাকক, ফ্লাইং ফক্স ও অন্যান্য প্রাণী দেখতে পাওয়া যায়। সজনেখালি বিভিন্ন ধরনের পাখি পর্যবেক্ষণের জন্যও বিখ্যাত। এই জঙ্গলে মাছরাঙার ৭ রকম আলাদা প্রজাতির দেখা পাওয়া যায়। এছাড়াও এখানে হোয়াইট বেলিড সি ঈগল, প্লোভারস, ল্যাপ উইঙ্গস, কারফিউ, হুইমপ্রেল, স্যান্ডপাইপার ও মাঝেমধ্যে পেলিকানও দেখতে পাওয়া যায়।
আমাদের পর্যটন ওয়েবসাইট দেখুনভারত সেবা আশ্রম গঙ্গাসাগরে অবস্থিত একটি এনজিও চালিত আশ্রম। এই আশ্রমে একটি মন্দির আছে এবং এই আশ্রমে পুণ্যযাত্রীদের ও অতিথিদের থাকবার ব্যবস্থা আছে। গঙ্গাসাগর মেলা চলাকালীন অতিথিদের থাকবার জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের কক্ষের জন্য এই আশ্রম একটি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান।
সাগরদ্বীপের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হল কপিল মুনির মন্দির। সাগরসঙ্গমের পবিত্র জলে স্নান করবার পরে পুণ্যার্থীরা কপিল মুনির মন্দিরে পূজা দিতে যান। ১৯৬০ সালে এক বিধ্বংসী ঝড়ে পুরাতন কপিল মুনির মন্দির আরও ৪টি মন্দির সহ ধ্বংস হয়ে যায়। পরবর্তীকালে মন্দিরটি পুনরায় নির্মিত হয়। বলা হয়, নির্বাণ প্রাপ্তির পর, কপিল মুনি ফিরে এসে তাঁর মা দেবহূতিকে মোক্ষ লাভের পথ দেখিয়েছিলেন। সেই কারণে আজও মানুষ মোক্ষপ্রাপ্তির আশায় এই মহাসাধকের পূজা করে।
গঙ্গাসাগরের আরেকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্দির ওঙ্কারনাথ মন্দির। মন্দিরটি ভগবান ওঙ্কারনাথ দেবের উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত। সাগরদ্বীপের সবুজ প্রকৃতির মাঝে অবস্থিত এই মন্দিরটির পরিবেশ অত্যন্ত শান্তিপূর্ন। এই মন্দিরে ততটা ভিড় হয় না তাই যেকোন ব্যক্তি এখানে এসে শান্তিতে উপাসনা করতে পারে।